নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভিকটিমের প্রায় ০৬ বছর আগের নাভারণ এলাকায় বিবাহ হয় এবং এক পর্যায়ে স্বামীর সাথে পারিবারিক কলহের জেরে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। আজ থেকে প্রায় আট মাস আগে সে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে চার বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসে এবং সেখানেই বসবাস করতে থাকে।
জসীম(৪০) ভিকটিমের প্রতিবেশীর বাসায় সপরিবারে ভাড়া থাকতো এবং একটি পেঁপে বাগানে দিন মজুরের কাজ করতো। একই স্থানে ভাড়া থাকায় জসীম ভিকটিমের বাড়িতে মাঝে মধ্যেই যাওয়া-আসা করতো।
এরই মাঝে একদিন ভিকটিমকে সে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং ভিকটিম ও তার পরিবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
এরপর জসীম গত ১০জুন সেখান থেকে পরিবার নিয়ে চলে যায়, কিন্তু যাওয়ার পরেও ভিকটিমের মোবাইল ফোনে বিভিন্ন সময় বিয়ের প্রস্তাবসহ আজেবাজে কথা বলতে থাকে।
একপর্যায়ে ভিকটিম বিয়ের প্রস্তাব বার বার প্রত্যাখ্যান করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
এমতাবস্থায় ঘটনার দিন গত ০৩ জুলাই রাত অনুমান আটটার দিকে ভিকটিমের বাড়ির পুরুষ লোক স্থানীয় বাজারে গেলে জসীম সুযোগ বুঝে ভিকটিমের বাড়িতে আসে এবং ঘরের জানালার পাশে অবস্থান নেয়।
এসময়ে রুমের ভিতরে ভিকটিম, তার শিশু সন্তান, তার মা এবং আট বছরের ছোট ভাই অবস্থান করছিল। আগে থেকেই জানালার পাশে অবস্থান নেওয়া জসীম সময়-সুযোগ বুঝে ভিকটিমকে লক্ষ্য করে এসিড নিক্ষেপ করলে ভিতরে থাকা ভিকটিম, তার মা এবং ছোট ভাইয়ের শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে এবং ঝলসে যায়।
এরপর ভিকটিম ও তার মা চিৎকার করে এবং জানালার দিকে তাকালে দেখতে পাই সেখানে জসীম দাড়িয়ে আছে এবং দেখা মাত্রই দ্রুত পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে এবং যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
এরপর ভিকটিমের বাবা ঝিকরগাছা থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানাই এবং সে বাদী হয়ে আসামীর বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করে।
উক্ত ঘটনাটি অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর ও স্পর্শকাতর হওয়ায় সম্মানিত পুলিশ সুপার জড়িত আসামীকে দ্রুত গ্রেফতারে থানা পুলিশ সহ অন্যান্য ইউনিটকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করেন।
বাদীর এজাহার ও সম্মানিত পুলিশ সুপার এর নির্দেশনায় থানা পুলিশ সহ একাধিক টিম ঘটনার দিন হতে আসামীকে গ্রেফতারে মাঠে নামে।
অবশেষে ঝিকরগাছা থানা পুলিশের একটি টিম গত ইং ১৫জুলাই গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে যে আসামি পার্শ্ববর্তী নড়াইল জেলার লোহাগাড়া ধানাধীন আমাদাহ নামক একটি স্থানে আছে।
সেই তথ্যের ভিত্তিতে আভিযানিক টিমটি ১৫জুলাই উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে কিন্ত আসামী বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকায় পুলিশ তাকে খুঁজে পায়না।
একপর্যায়ে পুলিশের টিমটি জানতে পারে আসামি লোহাগাড়া, নড়াইল সদর ও কালিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত কামাল প্রতাপ নামক বিশাল বিলের মাঝে অবস্থান করছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে এসআই তাপসের নেতৃত্বে গতকাল ১৭জুলাই বিকালে উক্ত টিমটি জেলের ছদ্মবেশ ধারণ করে বিলের মাঝখানে পৌঁছালে আসামি তাদের দেখে পানিতে ঝাঁপ দেয় তখন এসআই তাপসও পানিতে ঝাঁপ দেয় এবং আসামীর সাথে পানির মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
পরবর্তীতে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে আসামী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।
এসংক্রান্তে গ্রেফতারকৃত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
উপদেষ্টা: এ্যাড. এনামুল হক এনাম সম্পাদক : মোঃ শামীম আহমেদ অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লি. এর পক্ষে কেএম সবুজ কর্তৃক প্রকাশিত। মোবাইল নং : ০১৭১৫-৬২৭৮৯৪ , ০১৭৮৪-৮৩৮৬৮০ ই-মেইল: news@dhakabani.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ