
আমরা এক নজরে জেনে নেই চিকুন গুনিয়া রোগের করণীয় :
চিকুন গুনিয়া একটি ভাইরাসজনিত জ্বর, যা মূলত এডিস মশা (Aedes aegypti ও Aedes albopictus) এর কামড়ে ছড়ায়। এটি সাধারণত প্রাণঘাতী নয়, তবে প্রচণ্ড জ্বর, শরীর ব্যথা ও জয়েন্টে ব্যথার কারণে রোগীকে দুর্বল করে দেয়।
চিকুনগুনিয়ার লক্ষণসমূহ
হঠাৎ উচ্চ জ্বর
প্রচণ্ড মাথা ব্যথা
হাত, পা, হাঁটু ও জয়েন্টে তীব্র ব্যথা (কখনো দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়)
শরীরে লালচে ফুসকুড়ি
প্রচণ্ড দুর্বলতা
বমি ভাব
—
করণীয়
ঘরে করণীয়
1. বিশ্রাম নিন – শরীরের শক্তি ফিরে পেতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম অত্যন্ত জরুরি।
2. পর্যাপ্ত পানি পান করুন – ডিহাইড্রেশন রোধে পানি, স্যুপ, ফলের রস ইত্যাদি পানীয় গ্রহণ করুন।
3. জ্বর ও ব্যথা কমাতে
প্যারাসিটামল (Paracetamol) সঠিক মাত্রায় সেবন করা যায়।
কখনোই অ্যাসপিরিন বা আইবুপ্রোফেন ব্যবহার করা উচিত নয়, কারণ এতে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
4. গরম পানির সেঁক – জয়েন্টের ব্যথা কমাতে গরম পানির সেঁক সহায়ক।
5. হালকা খাবার খান – ভাত, স্যুপ, শাকসবজি, ফল ইত্যাদি খেতে পারেন।
—
ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি যদি—
জ্বর ৪–৫ দিনের বেশি স্থায়ী হয়।
তীব্র ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ দেখা দেয় (মূত্র কমে যাওয়া, মাথা ঘোরা)।
রক্তপাত (মাড়ি, নাক, বমি বা মলদ্বার দিয়ে) হয়।
শ্বাসকষ্ট বা প্রচণ্ড দুর্বলতা দেখা দেয়।
শিশু, গর্ভবতী নারী বা বয়স্ক ব্যক্তিরা আক্রান্ত হন।
—
প্রতিরোধ
এডিস মশা যেসব জায়গায় জন্মায় (জমে থাকা পানি, ফুলদানি, পুরনো টায়ার, ড্রাম ইত্যাদি), সেগুলো পরিষ্কার করুন।
দিনে ও সন্ধ্যায় মশার কামড় থেকে বাঁচতে মশারি, কয়েল, রিপেলেন্ট ব্যবহার করুন।
ফুলহাতা জামা, পায়জামা পরুন।
চিকুনগুনিয়ার কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ বা ভ্যাকসিন নেই। তাই মূল চিকিৎসা হলো লক্ষণ নিয়ন্ত্রণ ও বিশ্রাম।
লেখক: পল্লী চিকিৎসক মোঃ শামীম আহমেদ, স্বর্ণা মেডিকেল হল।