জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায় ঘোষণার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ একে একটি ‘ঐতিহাসিক মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করেন।তিনি বলেন, দেশের সর্বত্র ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে উঠবে—এটাই আগামী বাংলাদেশের পথরেখা। তিনি আরও জানান, সংস্কারের মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং সে লক্ষ্যে সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি মানুষ যাতে ন্যায়বিচার পায়, সে ধরনের রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আজকের রায় সেই পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ করে আসছিল যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনাই ছিলেন পরিকল্পনাকারী, নির্দেশদাতা ও সর্বোচ্চ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি। এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।সাবেক আইজিপি মামুনই এই মামলায় একমাত্র গ্রেপ্তারকৃত আসামি ছিলেন এবং তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে গঠিত ট্রাইব্যুনাল ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পুনর্গঠিত হয়। নতুন কাঠামোতেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাইয়ের ঘটনাবলী নিয়ে প্রথম বিবিধ মামলা দায়ের করা হয়।গত বছরের ১৭ অক্টোবর প্রথম বিচার কার্যক্রমে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
পরবর্তীতে চলতি বছরের মার্চে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক আইজিপিকে আসামি হিসেবে যুক্ত করা হয়। প্রসিকিউশনের দাবি অনুযায়ী, অপরাধ সংঘটনের সময়কাল ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত।১০ জুলাই তিন আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয় ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে—উসকানিমূলক বক্তব্য, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাইদ হত্যা, চানখাঁরপুলে ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা।মামলায় আন্দোলনকারী, আহত ব্যক্তি, চিকিৎসকসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষ্য দেন। উপস্থাপন করা হয় অডিও-ভিডিও, সংবাদ প্রতিবেদন ও জব্দকৃত গুলিসহ বিভিন্ন প্রমাণ। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ১২ অক্টোবর শুরু হওয়া যুক্তিতর্ক শেষ হয় ২৩ অক্টোবর। সেদিনই চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন।
উপদেষ্টা: এ্যাড. এনামুল হক এনাম সম্পাদক : মোঃ শামীম আহমেদ অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লি. এর পক্ষে কেএম সবুজ কর্তৃক প্রকাশিত। মোবাইল নং : ০১৭১৫-৬২৭৮৯৪ , ০১৭৮৪-৮৩৮৬৮০ ই-মেইল: news@dhakabani.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ