
চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে অবৈধভাবে অর্জিত ৬৭৮ কোটি টাকার মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।তিনি জানান, ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের আর্থিক লেনদেন, নথিপত্র ও ব্যাংক হিসাব খতিয়ে দেখে সিআইডি অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছে। প্রাথমিক তথ্য–প্রমাণে চোরাচালান ও উৎসহীন অর্থের সত্যতা মেলায় গত সোমবার (১৭ নভেম্বর) দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে ৬৭৮ কোটি ১৯ লাখ ১৪ হাজার ১৪ টাকার মানিলন্ডারিং মামলা রুজু করা হয়।
জসীম উদ্দিন খান আরও জানান, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা (৫৭) দীর্ঘদিন ধরে স্বর্ণ ও হীরা ব্যবসার আড়ালে দেশে–বিদেশে অর্থ পাচার ও চোরাকারবারি চালিয়ে আসছিলেন।অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বিদেশ থেকে বৈধভাবে ৩৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকার স্বর্ণবার, অলংকার ও লুজ ডায়মন্ড আমদানি করে। একই সময়ে স্থানীয় বাজার থেকে কেনা বা বিনিময় পরিবর্তন পদ্ধতিতে ৬৭৮ কোটি টাকার বেশি স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করলেও এর উৎস বা সরবরাহকারীদের বৈধ নথি দেখাতে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বিপুল পরিমাণ এসব পণ্য চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সিআইডি জানায়, চোরাচালানের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ও অপরাধলব্ধ অর্থ রূপান্তর, হস্তান্তর ও ব্যবহারের তথ্য বিশ্লেষণ করে মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় প্রতিবেদন অতিরিক্ত আইজিপির কাছে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে ১৬ নভেম্বর মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়।গুলশান থানায় দায়ের হওয়া এই মামলা এখন সিআইডির তফসিলভুক্ত হওয়ায় তদন্ত পরিচালনা করবে সিআইডি। প্রয়োজনীয় নথি, ব্যাংক লেনদেন ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই করে আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।