বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩২ পূর্বাহ্ন

শেখ হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
                                             
  •   Update Time : বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১৩k Time View  
  •                                      
                                   
                               

চব্বিশের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হয়েছে।তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর বুধবার তাদের মৃত্যুদণ্ডের ৪৫৩ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ফলে বুধবার থেকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে শেখ হাসিনা ও কামালকে।আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ রায়ের কপি হাতে পাওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ১৭ নভেম্বর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এছাড়া অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।ওইদিন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় করা এটিই প্রথম মামলার রায়।

মামলার দুই নম্বর অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এক নম্বর অভিযোগে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুনের অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে।ট্রাইব্যুনাল বলেছে, শেখ হাসিনা ড্রোন, হেলকপ্টার এবং প্রা্ণঘাতী অস্ত্র ব্যহারের নির্দেশ দিয়ে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি করেছেন। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আইজিপি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ পালন করেছেন। শেখ হাসিনা তাদের এই নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রথম পর্যায়ে শুরুতে বিচারক ট্রাইব্যুনালের জুরিসডিকশন, আসামিদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ এবং রোম স্ট্যাটিউট অনুযায়ী সুপিরিয়র কমান্ড রেসপন্সিবিলিটির গ্রাউন্ড আদালতে পড়ে শোনান। শুরুতেই বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার জানান, রায়টি ছয় ভাগে মোট ৪৫৩ পৃষ্ঠার।আন্দোলন দমন করার জন্য প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার এবং হেলিকপ্টার থেকে গুলির ‘নির্দেশে’ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল এবং সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার টেলিফোন কথোপকথন তুলে ধরেন তিনি।একই সময়ে হেলিকপ্টার থেকে ‘ছত্রী সেনা নামানোর’ বিষয় শেখ হাসিনা এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কথোপকথন তুলে ধরা হয়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং পরবর্তীতে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি করে হত্যার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।বিচারকাজ চলার সময় অডিও, ভিডিওসহ যেসব তথ্যউপাত্ত ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হয়েছে সেসবও বর্ণনা করেন বিচারক।ঘটনার শিকার ও সাক্ষীরা কী বলেছে তার বর্ণনা দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান চলাকালে বিভিন্ন ভিডিওতে পাওয়া শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের তথ্য–প্রমাণের বিবরণ দেওয়া হয়।এছাড়া ঢাকার যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, বাড্ডা, সাভার, আশুলিয়া, রংপুরসহ বিভিন্ন স্থানে যেভাবে প্রাণঘাতী গুলি ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের হত্যা করা হয়েছে, সেগুলোর ভিডিও ও তথ্যপ্রমাণের বিবরণ দেওয়া হয়।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 dailydhakabani
themesba-lates1749691102