ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা ঘিরে এখনো চূড়ান্ত সময় নির্ধারণ হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার হোসেন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং অন্যান্য কমিশনারদের সাক্ষাতের পর তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ইসি সচিব জানান, রাষ্ট্রপতি সামগ্রিক প্রস্তুতি ও তপশিল প্রক্রিয়া সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশেষভাবে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী ভোটারদের জন্য ‘আউট অব কান্ট্রি ভোট’ বাস্তবায়ন নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কারিগরি ও নীতিগত কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। সচিবের ভাষায়, “রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের জন্য সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, বিকেল ৪টায় সিইসির তপশিল ঘোষণার ভাষণ রেকর্ড করা হবে। তবে ভাষণটি প্রচার এবং তপশিল ঘোষণার সঠিক সময় নির্ধারণ নিয়ে কমিশনের ভেতরে আলোচনা চলছে। আগামী দুই ঘণ্টার মধ্যেই এ বিষয়ে আরও একটি আনুষ্ঠানিক আপডেট দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় এ এম এম নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন প্রতিনিধিদল বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। রেওয়াজ অনুযায়ী, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণার আগে কমিশন রাষ্ট্রপ্রধানকে সার্বিক প্রস্তুতি ও প্রস্তাবিত সময়সূচি জানিয়ে থাকে। এরপর সিইসির জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে টেলিভিশন ও বেতারে আনুষ্ঠানিক তপশিল ঘোষণা করা হয়।
এ নির্বাচনে অনেক নতুন উদ্যোগ যুক্ত হয়েছে। প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে তথ্য-প্রযুক্তি-নির্ভর পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে। একইভাবে দেশের ভেতরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা যারা নির্বাচনী দায়িত্বে মাঠে থাকবেন, তাদেরকেও পোস্টাল ব্যালট ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি কারাবন্দীরাও আইটি-সমর্থিত পদ্ধতিতে ভোট দিতে পারবেন।
দলীয় জোটের প্রার্থীদের প্রতীক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও এবার পরিবর্তন আনা হয়েছে। কোনো জোট করলেও নিজেদের দলীয় প্রতীকের বাইরে অন্য প্রতীকে ভোট চাওয়ার সুযোগ থাকছে না, যা রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।সর্বশেষ হালনাগাদ ভোটার তালিকা অনুযায়ী, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ এবং নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের voter's সংখ্যা ১,২৩৪ জন।
ভোটগ্রহণের জন্য ৪২ হাজার ৭৬১টি কেন্দ্র এবং ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি কক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে। পুরুষের জন্য ১ লাখ ১৫ হাজার ১৩৭টি এবং নারীর জন্য ১ লাখ ২৯ হাজার ৬০২টি ভোটকক্ষ রাখা হয়েছে। যেহেতু জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে, তাই গোপন কক্ষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।আগামী নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলবে, যাতে ভোটাররা দীর্ঘ সময় ধরে স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারেন। এতে গ্রামীণ এলাকা থেকে শুরু করে শহুরে কেন্দ্রী—সব জায়গায় বাড়তি চাপ মোকাবিলায় নির্বাচন কমিশন বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে।
উপদেষ্টা: এ্যাড. এনামুল হক এনাম সম্পাদক : মোঃ শামীম আহমেদ অফিসঃ ১৫০ নাহার ম্যানসন (৫ম তলা) মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা,ঢাকা -১০০০। খন্দকার এন্টারপ্রাইজ লি. এর পক্ষে কেএম সবুজ কর্তৃক প্রকাশিত। মোবাইল নং : ০১৭১৫-৬২৭৮৯৪ , ০১৭৮৪-৮৩৮৬৮০ ই-মেইল: news@dhakabani.com
প্রকাশিত সংবাদপত্রের অংশ