
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের জন্য একটি সমন্বিত নিরাপত্তা প্রটোকল সরবরাহ করবে পুলিশ। এই প্রটোকলে রাজনৈতিক নেতা ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের বাসস্থান, কার্যালয়, চলাচল, জনসভা এবং সাইবার স্পেসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির নেতৃত্ব ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের জন্য ইতোমধ্যে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।এতে আরও জানানো হয়, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় হামলাকারী ও তাদের সহযোগীদের পুলিশ শনাক্ত করেছে। তাদের গ্রেপ্তারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিবিড় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ইতোমধ্যে জব্দ করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজনদের আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) পরীক্ষা করা হচ্ছে।
প্রধান সন্দেহভাজন যাতে কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে না পারে, সে জন্য শুক্রবার রাতেই সব ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে তাদের ছবি ও প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। যদিও দেশের ভেতরে একাধিকবার সন্দেহভাজনদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে, বারবার স্থান পরিবর্তনের কারণে এখনো তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রধান সন্দেহভাজনের চলাচলের খতিয়ান বা ট্রাভেল হিস্ট্রি ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, আইটি ব্যবসায়ী পরিচয়ে তিনি গত কয়েক বছরে একাধিক দেশ ভ্রমণ করেছেন। সর্বশেষ গত ২১ জুলাই তার সিঙ্গাপুর সফরের তথ্য পাওয়া গেছে।হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে— এমন আরও কয়েকজনকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, রোববার ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হাইকমিশনারকে জানানো হয়, ভারতে অবস্থানরত পলাতক অপরাধী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিনষ্ট করা এবং আসন্ন নির্বাচন বানচালের অসৎ উদ্দেশ্যে ধারাবাহিকভাবে উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন এবং তার দলের সমর্থকদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকে দিচ্ছেন।
ভারত সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেন তারা অবিলম্বে এসব ফ্যাসিস্ট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। পাশাপাশি, শরিফ ওসমান হাদির হত্যাচেষ্টায় জড়িতরা যাতে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যেতে না পারে, সে বিষয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা ভারতে পালাতে সক্ষম হলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধও জানানো হয়।