
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক এবং কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনে দলটির প্রার্থী হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, তাকে ও তার সহকর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ সরাসরি প্রাণনাশের ভয় দেখাচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তবে এসব হুমকিতে তিনি ভীত নন উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, তাকে রক্ষা করার জন্য দেবীদ্বারের মা-বোনেরাই যথেষ্ট। তার ভাষায়, “আমাকে প্রথমে সেভ করবে দেবীদ্বারের নারীরা, এরপর আমার আশেপাশের সাধারণ মানুষ। এমনকি বিএনপি ও জামায়াতের অনেক নেতারাও আমার জন্য ঢাল হয়ে দাঁড়াবে।”
তিনি আরও বলেন, দেবীদ্বারে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের শক্তি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই করে আসছেন, তারা সবাই তার পাশে আছেন। কারও নাম প্রকাশ করতে না পারলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাজনৈতিক পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে দেবীদ্বারের সচেতন মানুষ অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে একসঙ্গে অবস্থান নেবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী গণসংযোগ ও প্রচারণা’ কার্যক্রম শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার জাফরগঞ্জ ইউনিয়নের বারুর গ্রামে আয়োজিত এক পথসভায় এসব কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। সভায় তিনি বলেন, এনসিপি রাজনীতিতে প্রতিহিংসা নয়, বরং সুস্থ ও ইতিবাচক প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস করে। “আমরা প্রতিযোগিতা করব ভালো কাজের মাধ্যমে। আপনারা যার যার পছন্দ অনুযায়ী ভোট দেবেন। কোনো মারামারি, হানাহানি করবেন না,”—এমন আহ্বান জানান তিনি।
হাসনাত বলেন, যারা মারামারির রাজনীতি করে, তারা মূলত সেই সহিংসতার মাধ্যমেই নিজেদের দল ও রাজনীতিকে উপস্থাপন করে। এনসিপি সেই পথে হাঁটতে চায় না। তিনি অভিযোগ করেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা তাকে ও তার সহকর্মীদের ফোন করে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন। তবে এসব ভয়ভীতি দেখিয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকা যায় না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তার ভাষায়, “মনে রাখবেন, যারা মানুষকে ভয় দেখায়, তাদের গদি লইড়া যাইতেছে। এই কারণেই তারা এখন ফোন দিয়ে হুমকি দেয়। মানুষ তখনই ভয় দেখায়, যখন সে নিজেই ভয় পায়।” তিনি আরও বলেন, এনসিপি কখনো কাউকে ফোন করে হুমকি দেয়নি, কাউকে ভয় দেখানোর রাজনীতিও করে না। কারণ ভয় দেখিয়ে মানুষের ভালোবাসা অর্জন করা যায় না, বুলেট দিয়েও ভালোবাসা কেনা সম্ভব নয়।
পথসভায় তিনি আরও দাবি করেন, যারা এনসিপির বিরোধিতা করছে তারা বুঝতে পেরেছে— দলটি ক্ষমতায় গেলে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও মামলাবাজির মতো অনৈতিক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এই আশঙ্কা থেকেই একটি গোষ্ঠী এনসিপির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং বিরুদ্ধাচরণ শুরু করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির দেবীদ্বার উপজেলা সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা রায়হান সিদ্দিক, শামীম আহমেদ, সাজেদুল রাফসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তারা সবাই দেবীদ্বারে গণভিত্তিক রাজনীতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং ভয়ভীতি উপেক্ষা করে সাধারণ মানুষকে এনসিপির পাশে থাকার অনুরোধ করেন।