
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্পন্ন করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) জোহরের নামাজ শেষে বেলা দুইটায় ঢাকার জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, জানাজা উপলক্ষে নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রশাসনিক প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় মর্যাদার অংশ হিসেবে গার্ড অব অনার, জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা পড়াবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক। তিনি বলেন, দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ, রাজনৈতিক নেতা, কূটনীতিক ও সাধারণ জনগণ জানাজায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান বিএনপি মহাসচিব।
ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এবং মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম খালেদা জিয়া সারা জীবন নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তার নেতৃত্ব, ত্যাগ ও সংগ্রাম বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি আরও বলেন, তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হওয়ার নয়। এই শোক ও বেদনা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভারী এবং হৃদয়বিদারক।
তিনি বলেন, “আমরা এই শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে চাই। বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শ ও রাজনৈতিক দর্শনকে সামনে রেখে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম চালিয়ে যাব।” তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের শান্তিপূর্ণভাবে জানাজা ও দাফন কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিএনপি মহাসচিব আরও জানান, জানাজা শেষে বেগম খালেদা জিয়াকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন চন্দ্রিমা উদ্যানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাফন করা হবে। পুরো অনুষ্ঠানটি সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করবেন।
শোকের এই দিনে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না করার জন্য তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানান এবং বলেন, শৃঙ্খলা ও সংযমের মধ্য দিয়েই প্রয়াত নেত্রীর প্রতি প্রকৃত সম্মান জানানো সম্ভব।