চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি :
চট্টগ্রাম মহানগরীর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বেশ কয়েকটি চক্র জনসাধারণের পকেট হতে নগদ টাকা, মোবাইল ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মালামাল হাতিয়ে নিচ্ছে। এই চক্রগুলো সাধারণত ভিড়ের মধ্যে বা জনসমাগম
স্থলে বেশি সক্রিয় থাকে। কখনো কখনো তারা যাত্রীবেশী হয়ে বা সাধারণ মানুষের মতো মিশে গিয়েও এই কাজ করে থাকে। এছাড়া তারা বিভিন্ন উৎসব বা অনুষ্ঠানেও এই ধরনের অপরাধ বেশি করে থাকে। এচক্র গুলো পকেট মার বা ছিনতাইয়ের সময় কখনো কখনো হিংসাত্মক আচরণপূর্বক ভিকটিমকে মারধর করতঃ জোর করে মোবাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তারা চুরি/ছিনতাইকৃত মোবাইল গুলো অধিক দামে দেশের বিভিন্ন জেলা সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, মায়ানমার, নেপাল ও ভারতে পাঠিয়ে দেয়। পুলিশের নিয়মিত অভিযানে এরূপ চক্রের সদস্যরা আটক হয়ে আইনের আওতায় আসলেও পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে পুনরায় একই অপরাধের জড়িত হয়ে পড়ছে। এই ধারাবাহিকতায় গত ১০/০৭/২০২৫খ্রিঃ তারিখ সিএমপি’র মহানগর গোয়েন্দা (পশ্চিম) বিভাগের কর্মরত এসআই(নি:)/মোঃ রবিউল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স সহ চট্টগ্রাম মহানগর এলাকায় বিশেষ অভিযান ডিউটি করাকালে রাত ২১.৩০ ঘটিকার সময় চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতয়ালী থানাধীন মুসলিম হাইস্কুলের গেটের সামনে অবস্থান করাকালীন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন যে, সিএমপির কোতোয়ালী থানাধীন, নন্দনকানন ৩নং গলি, হরিশদত্ত লেইন এর ১৫ নং রশিদ মঞ্জিলের (নিচ তলার), মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এর বাসার পূর্ব পাশে সোহেলের ভাড়াকৃত ০২টি কক্ষে কতিপয় ব্যক্তি চোরাইকৃত মোবাইল ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য অবস্থান করিতেছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে এসআই(নি:)/মোঃ রবিউল ইসলাম সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরচক্রের সদস্যরা কৌশলে দিকে বিদিক পালানোর চেষ্টাকালে ০১। মোঃ তানভির হাসনাইন (৩২), পিতা- আবদুল হান্নান, মাতা- শিরিন আক্তার, সাং- পশ্চিম বাকলিয়া (ডিসি রোড), ১৭নং ওয়ার্ড, ডাকঘর- চকবাজার, থানা- বাকলিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম, ২। মোঃ সোহেল উদ্দিন (৩২), পিতা- মৃত আবু তাহের, মাতা- সাজেদা খাতুন, সাং- বড় হাতিয়া, আমতলী, শরীমার পাড়া, ডাকঘর- বড় হাতিয়া, থানা- লোহাগড়া, জেলা- চট্টগ্রাম, বর্তমানে- ১৫ নং রশিদ মঞ্জিল, হরিশদত্ত লেইন, ৩নং গলি, নন্দনকানন, থানা- কোতোয়ালী, জেলা- চট্টগ্রাম, ৩। মোঃ রুবেল প্রকাশ চাকমা রুবেল (৩৬), পিতা- মৃত আব্দুল মালেক প্রকাশ বাদশা মিয়া, মাতা- বাসনা বেগম প্রকাশ ফাতেমা বেগম, সাং- মুছাপুর মালেকের নতুন বাড়ী, রংমেলা বাজার, হাই স্কুলের পিছনের বাড়ি, থানা- কোম্পানীগঞ্জ, জেলা- নোয়াখালী, বর্তমানে- উত্তর নালাপাড়া ২০নং গলি গুরা, সওদাগরের ভাড়াটিয়া (নিচতলা), থানা- সদরঘাট, জেলা- চট্টগ্রাম ৪। মোঃ মোহাম্মদ হোসাইন (২২), পিতা- মোঃ ফরিদুল আলম, মাতা- খদিজাতুল কোবরা, সাং- উত্তর চরমবা (বানোয়ার পাড়া), ডাকঘর- লোহাগড়া, থানা- লোহাগড়া, জেলা- চট্টগ্রাম, বর্তমানে- সামিরা এক্সাসরিজ, রেজওয়ান কমপ্লেক্স, রিয়াজউদ্দিন বাজার, থানা- কোতোয়ালী, জেলা- চট্টগ্রাম, ৫। আবদুল্লাহ আল মামুন (২৭), পিতা- মোঃ কবির আহাম্মদ, মাতা- মোহসেনা বেগম, সাং- দক্ষিন মরপলা, থানা- সাতকানিয়া, জেলা- চট্টগ্রাম, বর্তমানে- মন্নান শপিং কমপ্লেক্স, রিয়াজউদ্দিন বাজার, ৭ম তলা, থানা- কোতোয়ালী, জেলা- চট্টগ্রাম, কর্মস্থল- সামিয়া মোবাইল এক্সাসরিজ, রেজওয়ান কমপ্লেক্স, রিয়াজউদ্দিন বাজার, থানা- কোতোয়ালী, জেলা- চট্টগ্রাম, ’দের গ্রেফতার করেন। আসামীদের পালানোর কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামীরা তাদের হেফাজতে চোরাই মোবাইল আছে মর্মে স্বীকার করে। অতঃপর আসামীদের স্বীকারোক্তি ও দেখানোমতে ০২নং আসামী সোহেলের ভাড়াকৃত কক্ষ তল্লাশী করে তাদের দেখানো মতে ঘরের মেঝতে থাকা ১। ৩৪২ টি বিভিন্ন মডেলের ব্যবহৃত মোবাইল সেট, যার আনুমানিক মুল্য-৩০,০০০০০/-, ২। ০৬টি পুরাতন ব্যবহৃত ল্যাপটপ এবং চোরাই মোবাইল ও ল্যাপটপ ক্রয়-বিক্রয়ের নগদ ২,০০,০০০/- (দুই লক্ষ টাকা) উদ্ধার করেন। আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, তারা চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা হতে চুরি ও ছিনতাইয়ের মোবাইল এবং মালামাল গুলো অধিক দামে দেশের বিভিন্ন জেলা সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, মায়ারমার, নেপালে ও ভারতে পাঠিয়ে দেয় । উল্লেখ্য যে, গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ তানভির হাসনাইন (৩২) ও মোঃ সোহেল উদ্দিন (৩২)’দ্বয়ের বিরুদ্ধে সিএমপি’র কোতোয়ালী থানা সহ বিভিন্ন থানায় ডাকাতির প্রস্তুতি, চুরি, ছিনতাই ও অস্ত্র আইনে ০৪টি মামলা এবং আসামী মোঃ রুবেল প্রকাশ চাকমা রুবেল (৩৬) এর ০৫টি মামলা রয়েছে। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।