
দেশে ফেরার জন্য ট্রাভেল পাস হাতে পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দেশে ফেরার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে একদিনেই লন্ডনে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে তিনি ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “তিনি গতকাল আবেদন করেছিলেন। আমার জানা মতে সেটি সম্পন্ন হয়েছে।”
এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, “সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছে। তিনি ইতোমধ্যে ট্রাভেল পাস পেয়েছেন।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তার দেশে ফেরা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। গত ২৩ নভেম্বর তার মা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হলে তারেক রহমান জানান, দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত এককভাবে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে গত ১২ ডিসেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরবেন।
এদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আগমন উপলক্ষে একটি অভ্যর্থনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতোমধ্যে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে। পরে জানানো হয়, বিমানবন্দর থেকে সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে যাবেন তারেক রহমান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে বড় পরিসরে আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
২০০৭-০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি তারেক রহমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি পরিবারসহ লন্ডনে চলে যান এবং এরপর আর দেশে ফেরেননি। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর দিনই বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এরপর গত সাত বছর ধরে লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল যোগাযোগের মাধ্যমে তিনি দল পরিচালনা করে আসছেন। দেশে রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বিএনপিকে টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীরসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা।
২০২০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়াকে সাময়িক মুক্তি দিলেও দুটি শর্তের কারণে তিনি কার্যত গৃহবন্দি অবস্থায় ছিলেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাকে দেখা যায়নি। তবে ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে তার সাজা মওকুফ হয় এবং তিনি পূর্ণাঙ্গ মুক্তি পান। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত দুর্নীতির মামলাগুলোতে তাকে খালাস দেয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেওয়া বিভিন্ন মামলায় তারেক রহমানেরও সাজা হয়েছিল। পরে সেসব মামলায় তিনি খালাস পান, যার ফলে তার দেশে ফেরার পথ সুগম হয়।