শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের পাটভিত্তিক উৎপাদন খাতে বড় বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে চীন

ঢাকা বানী ডেস্ক
                                             
  •   Update Time : শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫
  • ১০k Time View  
  •                                      
                                   
                               

বাংলাদেশের সবুজ প্রযুক্তি, পাট, বস্ত্র ও ওষুধশিল্পে বড় ধরনের বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীনা বিনিয়োগকারীরা। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত উৎপাদন খাতের রূপান্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এ আগ্রহ এসেছে।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠককালে এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়নার (এক্সিম ব্যাংক) ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং দোংনিং এই আগ্রহের কথা জানান। সেসময় তার সঙ্গে ছিলেন চীনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ফাইন্যান্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটির প্রেসিডেন্ট ড. মা জুন।

ইয়াং দোংনিং বলেন, বাংলাদেশে চীনের দীর্ঘদিনের অবকাঠামো বিনিয়োগের পাশাপাশি এখন তারা উৎপাদন খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে রুফটপ সোলার প্যানেল এবং দেশের ‘সোনালি আঁশ’ পাটভিত্তিক জ্বালানি, বায়োসার ও প্লাস্টিকের বিকল্প তৈরির বড় প্রকল্প। তিনি জানান, এসব সরাসরি উৎপাদন খাতে এক্সিম ব্যাংকও অর্থায়নে আগ্রহী।

ড. মা জুন বলেন, ঐতিহ্যবাহী পাটশিল্প চীনা বিনিয়োগকারীদের কাছে বিশেষভাবে আকর্ষণীয়। তারা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে চান। তিনি জানান, সবুজ জ্বালানি, সার ও প্লাস্টিকের বিকল্প উৎপাদনে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে ১০ লাখ টন পর্যন্ত পাট ব্যবহার করতে প্রস্তুত। ড. মা আরও বলেন, চীনা অর্থায়নে পাটভিত্তিক যৌথ উদ্যোগের বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।

চীনের এই আগ্রহকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা চাইলে বাংলাদেশকে উৎপাদনশীল পণ্য রপ্তানির একটি হাবে পরিণত করা সম্ভব—যা উন্নত দেশসহ চীনে রপ্তানির সুযোগ আরও বাড়াবে। তিনি ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবাকেও চীনা বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চিহ্নিত করেন। প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সৌরশক্তি উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে চীন রুফটপ সোলারসহ সবুজ জ্বালানি খাতে বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিতে পারে।

এসময় তিনি চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে উৎপাদন কারখানা স্থানান্তরের আহ্বান জানান। তার মতে, দেশের বিপুল তরুণ কর্মশক্তি ও বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো যৌথ উদ্যোগে ব্যবহারের বড় সুযোগ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মাত্রা। আমরা এটিকে স্বাগত জানাই এবং চাই এগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হোক।’

ইয়াং দোংনিং জানান, এআই এবং ই-কমার্স খাতেও বিনিয়োগের সুযোগ চীন বিবেচনা করছে—যে দুই খাতেই চীন বৈশ্বিকভাবে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।

জবাবে প্রধান উপদেষ্টা চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কারখানা স্থাপনের আমন্ত্রণ জানান। তিনি বলেন, ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর এবং মিয়ানমার-থাইল্যান্ডসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারের কৌশলগত নিকটতা বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই অঞ্চলের সমুদ্র-সংযোগে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। চীনা শিল্পকারখানা এখানে স্থানান্তরিত হলে উৎপাদিত পণ্য উন্নত দেশসহ চীনেও রপ্তানি করা যাবে।

তিনি আরও বলেন, দক্ষিণ চীনের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপনে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে এলে আঞ্চলিক সংযোগ বাড়বে এবং স্থানান্তরিত কারখানার পণ্য রপ্তানি আরও সহজ হবে।বৈঠকের শুরুতে প্রধান উপদেষ্টা হংকংয়ের একটি আবাসিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষের মৃত্যুতে গভীর সমবেদনা জানান। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক ও সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় নিয়োজিত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 dailydhakabani
themesba-lates1749691102